Friday, February 28, 2020

ইসলামিক গল্প



আজ আমার বিয়ে হয়েছে আমি বসে আছি বাসর ঘরে।এই বিয়েতে আমি তেমন রাজি ছিলাম না কারণ যেমন জীবন সঙ্গী আমি পছন্দ করতাম তেমন মানুষের সাথে আমার বিয়ে হয়নি।কিন্তু তাতে আমি অখুশি নয় কারণ আল্লাহ সুবহানা তা'আলার ইচ্ছায় এ বিয়ে হয়েছে আর আল্লাহর ইচ্ছার বিরুদ্ধে অখুশি হওয়ার মতো সাহস আমার নেই। জন্ম-মৃত্যু,বিয়ে আল্লাহর হাতে এগুলো নিয়ে কখনো আল্লাহ কে দোষারোপ বা আফসোস করতে হয়না।

#আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন নারী নিজে বিয়ে করার জন্য যেন তার বোনের (অপর নারীর) তালাক না চায়। কেননা, তার জন্য (তাকদীরে) যা নির্ধারিত আছে তাই সে পাবে। (সহিহ বুখারী হাদিস নংঃ৬১৪৮)

তাই আমি বিশ্বাস করি বিয়ে আল্লাহর ইচ্ছে আমার বিয়ে হয়েছে আর যেহেতু আল্লাহর ইচ্ছে তাই নিশ্চয়ই এর ভিতর কল্যাণ আছে। ওহ আপনাদের তো আমার পরিচয় দেওয়া হয়নি আমার নাম ওয়াসেনাত ওহু নামটা খুব অদ্ভুত তাই না? আমার বাবা রেখেছিলো তিনি আজ বেঁচে থাকলে হয়ত খুব খুশি হতেন কারণ সব বাবা মায়ের কাছে মেয়ের বিয়ের দিন একদিকে যেমন আনন্দের অন্য দিকে তেমন কষ্টের।মেয়ে কে সু-পাএেরর হাতে তুলে দিতে পারলে বাবা মা যেমন খুশি হয় তেমন তাদের ছেড়ে চলে যাওয়া তেও কষ্ট হয়।

দরজা খুলে কারোর ঘরে ঢুকার শব্দে চিন্তার ঘোর থেকে বেরিয়ে আসে ওহু বুঝতে পারে তার স্বামী ভিতরে ঢুকেছে সাথে সাথে সালাম দেয় তার স্বামী কে কিন্তু কোনো উত্তর আসে না।ওহুর বুক ধড়ফড় করছে হাত পা কাঁপছে কেমন জানি একটা ভয় করছে। এভাবে একজন অচেনা পুরুষ ঘরে ঢুকে দরজা দিলে ভয় লাগাটাই স্বাভাবিক যতই হোক সে স্বামী তবুও তো অচেনায়!মুখ তুলে তাকানোর মতো সাহস হচ্ছে না ওহুর বোরকা পরা হাত মোজা,পা মোজা মুখে নেকাব পরে স্বামীর জন্য অধীর আগ্রহে বসে থাকা ওহুর সেই অপেক্ষা যেনো তাচ্ছিল্য হলো।কোনো কথা তো দূরে থাক সালামের উত্তর পর্যন্ত দিলো না সোজা একটা বালিশ নিয়ে সোফায় শুয়ে পড়লো।ওহু কি করবে বুঝতে পারছে না তার স্বামী কেনো সোফায় গিয়ে শুয়ে পড়লো সেটাও বুঝতে পারছে না কিন্তু এটুকু বুঝা যাচ্ছে কোনো গোল মাল আছে। আস্তে করে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায় ওহু চোখ তুলে তাকায় স্বামীর দিকে,কপালের ওপর হাত রেখে শুয়ে আছে দেখে বুঝা যাচ্ছে যথেষ্ট সুন্দর তিনি,গায়ের রং উজ্জ্বল ফর্সা লম্বা চাওড়া মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর ওহু যেনো প্রথম বার কোনো পুরুষ কে এত সময় ধরে দেখলো এবং তার প্রেমে পড়ে গেলো কিন্তু ওহুর নিজেকে তার স্বামীর অযোগ্য মনে হচ্ছে কারণ এত সুন্দর সে না যতটা তার স্বামীর জন্য হওয়া উচিত ছিলো হয়ত এজন্য তার স্বামী আলাদা শুয়েছে কিন্তু ওহু যতদূর জানে তার স্বামী তাকে দেখেনি বাবা মায়ের পছন্দে বিয়ে করেছে তাহলে না দেখেই অপছন্দ করলো কিভাবে? ভাবতে ভাবতে ওহু হালকা এগিয়ে গেলো তার স্বামীর দিকে।স্বামী কে উদ্দেশ্য করে বললো

"এই যে শুনছেন?" রায়ান কাপল থেকে হাত সরিয়ে উঠে বসে ওহু একটু পিছিয়ে যায়।
"কি ব্যাপার কি দরকার? আপনি এখনো ঘুমানি কেনো?"
"আপনি এখানে ঘুমাচ্ছেন কেনো?আপনার খাটে এসে ঘুমান অসুবিধা হলে আমি এখানে ঘুমাচ্ছি"
"নো ইট’স ওকে আপনি ওখানে ঘুমান আমি এখানে ঠিক আছি"
"এটা কিভাবে হয় বলুন স্বামী সোফায় ঘুমাবে আর স্ত্রী বিছানয়?"
"ওয়েট ওয়েট স্বামী? আপনার স্বামী কে? দেখুন আমি এ বিয়ে করতে চাইনি আমার বাবা মায়ের ইচ্ছায় করেছি তাই আমার ওপর স্বামীর অধিকার খাটাতে আসবেন না আর ডোন্ট কল মি স্বামী ওকে? গো যাস্ট লিভ মি এ্যালোন!

ওহু কে কথা গুলো শুনিয়ে আবার শুয়ে পড়লো রায়ান ওহুর মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো এমন কথা শুনে।বাসর রাতে কোনো মেয়ে স্বামীর মুখ থেকে এমন কথা শুনলে কেমন লাগবে?শুধু বাবা মায়ের ইচ্ছা পূরনের জন্য এমন ভাবে অন্য একটা মেয়ে কে বলিদান দিতে এসব পুরুষদের কি বিবেকে বাধে না?ওহুর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো বিছানার ওপর বসে হাত মোজ পা মোজা নেকাব খুললো ওহু,কত ইচ্ছা ছিলো এই বাসর রাত নিয়ে,স্বামীর সাথে নামাজ পড়বে হাতে হাত রেখে সারাজীবন আল্লাহর পথে চলার প্রতিশ্রুতি করবে,মনে জমে থাকা কত কথা কত কষ্টের গল্প করবে এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে নতুন জীবন শুরু করবে।স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেলো খুব কান্না পাচ্ছে ওহুর বাবা মা থাকলে হয়ত এমন হতো না।ওহুর জন্মের ২বছর পর রোড এক্সিডেন্ট মারা যায় বাবা।অনেক কষ্টে মা সংসার চালাতো,ওহু ছিলো তাদের প্রথম সন্তান ওহুর কথা ভেবে তার মা অন্য কোথাও বিয়ে করেনি ওহুর সব চাচারা মিলে খরচ দিতো ওহুর আর ওহুর মা'য়ের পাশাপাশি দর্জির কাজ করতো ওহুর মা।ছোট থেকেই ওহুর মা ওহু কে ইসলামের পথে চলানোর চেষ্টা করছে  ইসলামের সকল বিষয়ে জ্ঞান দিয়েছে এবং সে অনুযায়ী বড় করেছে, মায়ের সাথে দিন গুলো ভালোই পার হচ্ছিলো ওহুর কিন্তু তা আর বেশিদিন কপালে সইলো না এসএসসি পাশ করার পরপরই স্ট্রোক করে মারা যায় ওহুর মা।তারপর থেকে সম্পূর্ণ একা হয়ে যায় ওহু মেজো চাচার আশ্রয় নেয় কোনোরকম ইন্টার পাশ করে অনার্স সবে ভর্তি হয়েছিলো হুট করে কোথা থেকে একটা বিয়ের প্রস্তাব আসে চাচা চাচি সবাই রাজি হয়ে যায়,ছেলে অনেক আগে থেকেই চাচা খুঁজছিলো কিন্তু অনাথ বলে তেমন কোনো ছেলে পাচ্ছিলো না কিন্তু হঠাৎ এই প্রস্তাব কোথা থেকে আসে আর অনেক আগ্রহ করে ওহু কে নিতে চাই, চাচা চাচী ও রাজি হয়ে যায় ওহুর কাছ থেকে কোনো অনুমতি পর্যন্ত নেয় না,ওহু বলেছিলো ছেলে যেনো তাকে ভালোভবে দেখে নেয় এবং অবশ্যই যেনো ধার্মিক হয় কিন্তু তার উত্তরে চাচী বলে
"তোর মতে মাউড়া মেয়ে যে কেউ বিয়ে করছে তাই তো কপাল তাও আবার ছেলে বিদেশ থেকে পড়াশোনা করে আসা ছেলেরা অনেক বড়লোক এমন ছেলে কোথায় পাবি?রাজরানী করে রাখবে তোকে তাই চুপচাপ বিয়ে টা করে ফেল আর আমাদের মুক্তি দে"
এমন কথা শোনর পর ওহুর আর কিছু বলার সাহস হয়নি চুপচাপ বিয়ে করে চলে এসেছে অচেনা কারোর ঘরে সেখানে এসে স্বামীর কাছে তাকে শুনতে হলো ভিন্ন কথা।মনে মনে আল্লাহ কে উদ্দেশ্য করে ওহু বলে
"হে আল্লাহ আমি আপনার প্রতি নারাজ নয় নিশ্চয়ই আপনি ধৈর্যশীলের সহায় হবেন।আমি ধৈর্য ধারণা করবো কিন্তু আমার খুব কান্না পাচ্ছে আমি কি একটু কাঁদতে পারি? এই কান্না আপনার প্রতি কোনো আক্ষেপ থেকে নয় এ কান্না নিজের মন থেকে সব কষ্ট দূর করার জন্য" মনে মনে কথা গুলো বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে ওহু কিন্তু কোনো শব্দ করা যাবে না তাই মুখে কাপড় চেপে কান্না করতে থাকে।

ফজরের আজানে ঘুম ভাঙ্গে ওহুর কান্না করতে করতে কখন ঘুমিয়ে গেছে ঠিক পায়নি।আস্তে করে উঠে দেখে তার স্বামী সেভাবেই শুয়ে আছে। নামাজের জন্য তার স্বামী কে ডাকা উচিত। ওহু ওজু করে এসে স্বামীর সামনে দাঁড়ালো স্বামী কে উদ্দেশ্য করে বলে
"আসসালামু আলাইকুম! শুনতে পারছেন? উঠুন আজান দিচ্ছে আল্লাহ ইবাদতের জন্য আপনাকে মসজিদ ডাকছে উঠুন"
রায়ান বিরক্ত নিয়ে উুঠে বসে রাগ নিয়ে ধমক দিয়ে বলে
"What's Your problem? সমস্যা কি আপনার? শান্তিতে কি একটু ঘুমাতে দিবেন না? এমনিতেই আমার জীবনে অশান্তি বাঁধিয়ে দিয়েছেন আর কি চান?
রায়ানের এমন ধমকে ওহু যথেষ্ট ভয় পায় আমতা আমতা করে বলে
" না মানে আজান দিচ্ছে তাই নামাজের জন্য ডাকছিলাম"
"আজান দিচ্ছে তো কি? আপনার নামাজ পড়তে ইচ্ছে করলে আপনি পড়ুন আমাকে কেনো ডাকছেন? যত্তসব অশান্তি আমার ঘাড়ে"
প্রচন্ড রাগ দেখিয়ে রায়ান আবার শুয়ে পড়ে ওহু আর কিছু না বলে ব্যাগ থেকে জায়নামাজ বের করে নামাজে দাঁড়ায় মোনাজাতে বাবা মায়ের জন্য দোয়া করে এবং স্বামীর হেদায়েতর জন্য দোয়া করে।নামাজ শেষে তাজবি পড়তে থাকে কোরআন শরীফ আনতে না পারায় পড়তে পারে না।রায়ানের ঘরে যে কোরআন শরীফ নেই তা ভালো ভাবেই বুঝতে পারে।তাজবি পড়তে পড়তে কখন সকাল হয়ে যায় তা খেয়াল করেনি ওহু দরোজায় টোকা পড়তেই উঠে খুলে দিয়ে দেখে তার শ্বাশুড়ি হাসিমুখ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।ওহু সাথে সাথে সালাম দেয় তার শ্বাশুড়ি হাসিমুখে উত্তর দিয়ে ওহু কে বলে রায়ান কে নিয়ে নিচে খেতে আসতে  ওহু মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দেয়।কিন্তু রায়ান কে আবার ডাকবে? ডাকলে যদি বকা দেয়?ভয়ে ফাঁকা ঢোক গিলে সোফার দিকে তাকিয়ে দেখে রায়ান উঠে বসে চোখ ডলছে তারপর উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলো ঘরে যে একটা মানুষ আছে তা রায়ানের আচরণ দেখে বুঝায় যাচ্ছে না এমন ভাবে চলছে যেনো ওহু কে দেখেও দেখতে পারছে না।ওহু বসে থাকে রায়ানের বের হওয়ার অপেক্ষায় একটু পরে রায়ান বেরিয়ে আসে কোমরে টাওয়েল পেঁচানো এমন ভাবে কোনো পুরুষ কে ওহু কখনো দেখনি লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে নেয় কিন্তু মন একটু দেখার জন্য আকুপাকু করে।স্বামী কে দেখা তো জায়েজ আছে তাই ওহু আড় চোখে তাকায় রায়ানের দিকে রায়ান কে দেখে অবাক হয়ে যায় একেবারে বলিষ্ঠ সুঠাম গড়নের পুরুষ, যেমন সুন্দর তার চেহারা তেমনি সুন্দর তার দৈহিক গঠন যে কেনো ছবির নায়কের থেকে কম নয়।এমন গঠন দেকে ওহুর খুশি হওয়ার কথা কিন্তু ওহুর মন খারাপ হয়ে যায় কারণ ওহুর নিজেকে আরো ছোটো মনে হচ্ছে নিজেকে আরো অযোগ্য মনে হচ্ছে।

রায়ান ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে সুন্দর করে গুছিয়ে নিলো ওহুর সাথে কথা তো দূরের কথা একবার তাকায় পর্যন্তনি।গুছানো শেষে রায়ান বেরিয়ে গেলো রুম থেকে ওহু দ্রুত উঠে রায়ানের পিছু পিছু গেলো।নিচে নামতে ওহুর চোখ ছানা বড়া হয়ে যায় একেবারে রাজপ্রাসাদের মতো বাড়ি খুব সুন্দর করে সাজানো সব কিছু ওহু কখনো এতবড় বাড়ি দেখেনি।খাবার টেবিলে শ্বশুর শ্বাশুড়ি বসে আছে ওহু সামনে এসেই তাদের কে সালাম দেয়।হাসিমুখে সালামের উত্তর দিয়ে ওহু কে বসতে বলে ওহু বসে কিন্তু রায়ান না বসে বাইরের দিকে চলে যেতে রায়ানের বাবা বলে

"রায়ান কোথায় যাচ্ছো?"
"বাইরে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে"
"কাল তোমার বিয়ে হয়েছে আর আজ তুমি আড্ডা দিতে যাচ্ছো? তাও আবার আমাদের সাথে না খেয়ে?
" ওহ ড্যাড আমি আর পারছিনা এসব নিতে বিয়ে করতে বলেছো করেছি আর কোনো কিছুর জন্য আমাকে জোর করতে পারবা না প্লিজ লিভ মি আল আফ দিস"
"খবরদার আমাকে ড্যাড বলবা না বাবা বলে ডাকতে পারলে ডাকবা নাহলে ডাকবা না।আর বিয়ে কোনো ছেলে খেলা না যে করে নিলাম দ্বায়িত্ব শেষ বউমার প্রতি তোমার একটা কর্তব্য আছে"
"আমি এ বিয়ে মানি না ওকে?আর ঐ নেকা মেয়েটাকে আমি বউ বলে মানিও না"

ওহু শ্বশুর কে উদ্দেশ্য করে বলে
"বাবা থাক উনাকে যেতেদিন"

রায়ান আর কথা না বলে চলে গেলো রায়ানের বাবা মাথা নিচু করে ফেললো বউমার সামনে ছেলের এমন ব্যবহারে মাথা নিচু হয়ে যাওয়ারি কথা।ওহু কে উদ্দেশ্য করে শ্বশুর বলে

"রায়ান কে আমার মনের মতো মানুষ করতে পারিনি রায়ান আমাদের একমাএ ছেলে তাই অনেক আদর দিয়ে বড় করেছিলাম ছোট বেলায় মাদ্রাসা পড়তে দিয়েছিলাম কিন্তু পড়েনি,জোর করে তো পড়ানো যায় না তাই স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলাম সেখানে পড়াশোনা করতো কিন্তু ঠিকমতো নামাজ কালাম পড়াতে পারিনি,ইন্টার পাশ করার পর জেদ ধরো বিদেশে গিয়ে পড়বে আমরা রাজি ছিলাম না কারণ আমাদের একমাএ ছেলে দূরে পাঠাতে চাইনি কিন্তু তার জেদের কাছে হার মানতে হয়েছে, শর্ত ছিলো পড়া শেষ করে চলে আসতে হবে তাহলে পাঠাবো সেই শর্তে সে পড়াশোনা করে ফিরে এসেছে কিন্তু আবার যাওয়ার জন্য জেদ করছে জানি না ওখানে এমন কি আছে যা ও এখানে পায়না।তাই ভাবলাম এদেশে ওর বিয়ে দিয়েদি যাতে আমাদের ছেড়ে না যায় কিন্তু জানি না ও কি করবে।
ওহু মা আমাদের মেয়ে নেই তাই আমার বউমা চাইনি মেয়ে চেয়েছি এজন্য সব সময় এমন মেয়ে খুঁজতাম যে ধার্মিক এবং যে মেয়ে বাবা মায়ের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত যাতে আমরা তাকে মা বাবার ভালোবাসা দিয়ে আপন করে নিতে পারি।আল্লাহর লাখ লাখ শুকরিয়া তেমনি মিলিয়ে দিয়েছে কিন্তু আমার ছেলে তার মর্ম বুঝতে পারছে না। আমাদের কে তুৃমি ক্ষমা করে দাও মা হয়ত তোমার সাথে আমার ছেলের বিয়ে দিয়া উচিত হয়নি আমার ছেলে তোমার যোগ্য না।
" ছি ছি কি বলছেন বাবা?এমন ভাবে বলবেন না"

"এই যে বাবা বলে ডাকছো মনটা আনন্দে ভরে যাচ্ছে,ওহু মা ছেলের ভালোবাসা পায়নি আমরা মেয়ের ভালোবাসা দিবা?শ্বশুরের এমন কথায় ওহু কান্না করে ফেলে মনে মনে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে উঠে আসে শ্বশুরের পায়ের কাছে বসে বলে
" আজ থেকে আমি আপনাদের মেয়ে বাবা"
শ্বশুর খুশি হয়ে মাথায় হাত রেখে দোয়া করে শ্বশুড়ি ওহু কে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে।ওহুর যেনো সব কষ্ট মুছে গেলো ওহুর আর কোনো কষ্ট হচ্ছে না খুশিতে ওহুর মন ভরে গেলো নতুন করে সে বাবা মা কে পেলো আল্লাহ কে লাখ লাখ শুকরিয়া জানালো।স্বামীর ভালোবাসা পাক বা না পাক তা নিয়ে ওহুর আর কোনো কষ্ট নেই কারণ সে বাবা মা কে পেয়েছে।

রাত প্রায় ১২ টা রায়ান এখনো ঘরে ফেরেনি ওহুর শ্বশুর শ্বাশুড়ি ওহু কে ঘুমিয়ে পড়েছে ওহু কেও বললো ঘুমিয়ে পড়তে কাজের লোক দরজা খুলে দেবে কিন্তু ওহুর ঘুম আসছে না।ওহু সব কিছু পেলেও তবুও মনের কোথাও যেনো একটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে,ওহু বসে আল্লাহর ইবাদাতে মশগুল হঠাৎ কলিং বেল বেজে ওঠে ওহু উঠে দরজা খুলতে যাবে তার আগেই কাজের লোক খুলে দিয়েছে। রায়ান কে উপরে আসতে দেখে ওহু দ্রুত ঘরে এসে সোফায় শুয়ে পড়ে,রায়ান ঘরে ঢুকে ওহু কে সোফায় শুয়ে থাকা দেখে কিছু না বলে ঢপ করে বিছানায় শুয়ে পড়ে ৫ মিনিট পরেই ফোন বেজে ওঠে রায়ানের।ওহু তখনো জেগে চুপচাপ শুয়ে আছে চাদর মুড়ি দিয়ে যাতে রায়ান বুঝতে না পারে ওহু জেগে।রায়ান কল রিসিভ করে বলে

"সরি সুইট হার্ট খুব বিজি ছিলাম তাই কল করতে পারিনি"
ওহু বুঝতে পারছে রায়ান কোনো মেয়ের সাথে কতা বলছে নাহলে সুইট হার্ট বলতো না কিন্তু মেয়েটা কি বলছে শোনা যাচ্ছে না,শুধু এটুকু বোঝা যাচ্ছে মেয়েটা অনেক রাগ করছে রায়ান কল না দেওয়াই।রায়ান কথা বলে যাচ্ছে
"মালিহা প্লিজ ডোন্ট বি Angry আমি সরি বলছি তো আর ভুল হবে না।"
ওহু এবার বুঝতে পারছে ওহু কে কেনো রায়ান মানতে পারছে না স্ত্রী হিসাবে,ওহুর খারাপ লাগছে কিন্তু ওহুর বিশ্বাস আল্লাহ ধৈর্য শীলদের সহায় অবশ্যই হবে।

"হুয়াট তুমি দেশে আসছো? কবে কখন?"
কিছুক্ষণের জন্য রায়ান চুপ হয়ে গেলো মনে হচ্ছে রায়ান চিন্তাই পড়ে গেছে।

চলবে.....

1 comment: