Wednesday, July 1, 2020

গল্পঃ # ভাবি_ যখন_ বউ পর্বঃ#_ ১০


যখন জ্ঞান আসলো নিজেকে হাশপাতালে আবিষ্কার করলাম। তাকিয়ে দেখি অবন্তী আমার পাশে বসে আছে, আমি ওর দিকে তাকালাম। আমার তাকানো দেখে অবন্তী আমায় জড়িয়ে ধরে কান্না করতে শুরু করলো।কিছুখন পর ছেরে দিয়ে বললো।

অবন্তীঃ এখন কেমন লাগছে?

আমিঃভালো।

অবন্তীঃ টেনশনের দরকার নাই, খুব বেশি কিছু হয়নি, ডাক্তার বলেছে ২-১ দিনের মধ্যে বাসায় চলে যেতে পারবে।

আমিঃহুম।

অবন্তীঃ আমি তুমার আব্বু আম্মু কে। কল দিয়ে আসতে বলেছি।

আমিঃ বুঝলাম না অবন্তী হঠাত করে আমার আব্বু আম্মু কেন বলছে? তারওতো আব্বু আম্মু।কিছু না বলে চুপকরে রইলাম।

অবন্তীঃ ওনারা আসছে তুমি শুয়ে থাকো। 

আমিঃ আপনি কোথায় যাচ্ছেন?

অবন্তীঃ আমার একটু কাজ আছে।

আমিঃ আমার এই অবস্থায় অবন্তী আমার পাশেথাকবে সেটা না করে বলতেছে তার নাকি কাজ আছে। বাবা মা আসা পর্যন্ত থাকুন।

অবন্তীঃ না দেরি হয়ে যাবে অন্য কোনো দিন দেখে যাবো।

আমিঃ অবন্তী উঠে চলে গেলো,আমি শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলাম। হঠ্যাথ করে অবন্তীর কি এমন হলো যে এতো কাজ আমাকেউ জানাচ্ছে না। আম্মু আব্বু আসলো,,,,
এসে আমাকে ধরে কান্না করতে লাগলো। আমি শান্তনা দিলাম যে আমি ঠিক আছি। শুধু মাথায় একটু আঘাত লাগছে। 

মাঃ অবন্তী কই?

আমিঃ এইতো একটু আগে গেছে।ওর নাকি একটা খুব জরুরী কাজ আছে!

বাবাঃ কি এমন জরুরী কাজ যে তোর পাশে থাকতে পারছেনা।

আমিঃ বাদ দাও, আবার চলে আসবে। আরো কিছুখন কথাবার্তা বললাম,সেদিন হাসপাতালে থেকে গেলাম। 
আব্বু আম্মুও থেকে গেলো। পরের দিন হাসপাতাল থেকে বাসায় চলে গেলাম... কিন্তু এই ২ দিনে অবন্তী এক বারো আসেনি এবং একটা কলও দেয়নি।  আমিও আর নিজে থেকে দেই নি। ১ সপ্তাহ পর মোটামুটি সুস্থ, 
তাই চিন্তা করলাম নতুন অফিসে জয়েন করে ফেলি, বসে থাকা ঠিক হবে না।তারা তাড়ি রেডি হয়ে সকাল বেলা বের হচ্ছি আম্মু সামনে আসলো,,,

মাঃ কোথাও যাচ্ছিস? 

আমিঃ হুম, নতুন চাকরী পেয়েছি, বেতনও আগের থেকে ভালো। কষ্টও কম তাই চিন্তা করলামনা আজ
 থেকেই শুরু করে দেই। 

মাঃ সে কিরে তুই তো আমাদের একবারও বলিস নি।কখন পেলি? 

আমিঃ যেদিন এক্সিডেন করেছিলাম সেদিন। আম্মু বাবা কে ডেকে বললো, বাবাও অনেক খুশি, দুজনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বের হবো এমন সময় আবার 
দাঁড়িয়ে গেলাম।

বাবাঃ কিছু বলবি?

আমিঃ অবন্তীকে কেউ কিছু বলবে না, বলার দরকার নেই।

মাঃ কেন রে এমন একটা খুশির খবর মেয়েটাকে না দিয়ে পারি। 

আমিঃ না দেওয়ার দরকার নেই। সময় হলে জানবে, এখন নিজে থেকে কেউ কিছু বলবে না।  

বাবাঃ আচ্ছা ঠিক আছে কিছু বলবো না।

আমিঃ আমি আর কিছু না বলে রওনা দিলাম।৩০ মিনিট পর অফিসে গেলাম। ম্যানেজার কে সালাম দিলাম। ওনি সব কিছু ঠিক ঠাক করে দিলো। আমাকে 
সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে আমার ডেস্ক দেখিয়ে দিলো।এবং কাজ বুঝিয়ে দিলো। নতুন অফিস নতুন কাজ ভালোই লাগছে।কিন্তু বার বার অবন্তীর কথা 
মনে পরতে লাগলো। আজকে এতো দিন অবন্তী একবারো এটা কলও দেয়নি কারন কি? অবন্তী কি নতুন কারো সাথে!! না এটা হতে পারে না। বসে বসে ওর কথা ভাবতেছি এমনসময় লিমা এসে একটা টোকা দিলো

লিমাঃ কি বেপার স্যার,ম্যাম এর কথা খুব মনে পরছে বুঝি?

আমিঃ আরে না, তুই কখন আসলি?

লিমাঃ আসছি তো অনেক আগে, এসে দেখলাম তুই বসে বসে কি নিয়ে চিন্তা করছিস।

আমিঃ না তেমন কিছু না ।

লিমাঃ নতুন অফিস কেমন লাগছে?

আমিঃ ভালোই।

লিমাঃ কোনো প্রবলেম হলে ম্যানেজারকে বলিস

আমিঃ আচ্ছা... ঠিক আছে।

লিমাঃ তুই থাক আমি বাবার সাথে দেখা করে আসি।

আমিঃ ওকে যা। তারপর আবার কাজ করতেলাগলাম। কিন্তু বার বার অবন্তীর কথাই মাথায় ঘুরতে লাগলো।বিকাল বেলা অফিস শেষ করে আয়মানকে কল দিয়ে আসতে বললাম.... আয়মান আসলো, দুজনে এটা রেস্টুরেন্ট এ গেলাম, কিছু খাবার অডার দিলাম।

আয়মানঃ কিরে তুইতো পুরাই চেইঞ্জ,,,,,,চাকরি পাইছিস?

আমিঃ হুম

আয়মানঃ শালা একবারো বললি না।

আমিঃ তোর জন্য সারপ্রাইজ ছিলো। এখন তো বলে দিলাম।

আয়মানঃ হুম,,,,,তা আজকে কয় দিন।
.
.
.গল্প পড়ে কেউ কেটে পরবেন না,সবার কাছেঅনুরোধ! সবাই গঠন মূলক মন্তব্য করবেন।গল্পে আপনাদের আশানুরূপ লাইক পেলেও তেমন কোনো মন্তব্য পাইনা।
গঠনমূলক কিছু মন্তব্য করে আপনারা আমাকে উৎসাহ দিতে পারেন বা গল্প সম্পর্কে আপনাদের অনুভুতি প্রকাশ করতে পারেন।এতে আমার ও ভালো লাগে তাই।শুধু লাইক না করে গঠনমূলক কিছু মন্তব্য ও করবেন আশা করছি।ধন্যবাদ ইতিঃ
 (#jibon)গল্পের মাঝে বিরক্ত করার জন্য দুঃক্ষিত
.
.
আয়মানঃ কোন লিমা?

আমিঃ আরে আমাদের কলেজ ফ্রেন্ড লিমা।

আয়মানঃ ওআচ্ছা ভালো। আমার  জন্যেও একটা দেখ।

আমিঃ তুই চাকরি করলে তোর বাবার টাকা  কে খাবে?

আয়মানঃ আরে না আগের মতো টাকা দেয়না আব্বা কি পরিমাণ কিপটে তুই সেটা ভালো করেই জানিস।

আমিঃ আচ্ছা,,,,, দেখবো।

আয়মানঃ তোর ভাবি বউ কেমন আছে?

আমিঃ ভাবি বউ মানে????

আয়মানঃআগে ছিলো ভাবি এখন হয়ছে বউ, দুইটা মিলে ভাবি বউ।

আমিঃ তুই কোন দিন ঠিক হবি না।

আয়মানঃ তো কি অবস্থা উনার, এখন তো অনেক খুশিতে থাকবে তাইতো?

আমিঃ ওকে,কিছু জানাই নি।

আয়মানঃ কেনো?

আমিঃ সব কিছু, বললাম।

আয়মানঃ জুয়েল, দোস্ত! তরে আমি আগে যেই কথাটা বরছি এখনো সেই কথাটাই বলতেছি। ওই মেয়েটার মধ্যে কোনো ঘাপলা আছে।

আমিঃ যেমন

আয়মানঃ প্রথম তোর ভাই মারা যাওয়ার পর অবন্তী যদি তদের বাসা থেকে চলে যেতো খুব ভালো বিয়ে করতে পারতো না। ওর ভাগ্য ভালো যে তুই ওকে আবার বিয়ে করেছিস।দ্বিতীয়ত তোর বাবা মা অবন্তীকে যে পরিমান ভালবাসে, আদর করে আমার মনে হয় না প্রথিবীর অন্য কোথাউ এমন আদর পাবে।
সব কিছু থাকা স্বত্বেও অবন্তী তোর সাথে একি খাটে থাকে না। এই থেকেই তো বুঝা যায় ওর মাঝে কোনো ঘাপলা আছে।

আমিঃ কিন্তু আমি তো ওকে কোনো অভাব দেখাইনি। ওর সব গুলো স্বপ্নই পুরন করেছি।

অায়মানঃ আমার মনে হয় ওর কোনো পুরোনো বয়ফ্রেন্ড আছে।

আমিঃ আরে না, এটা হয়না।

আয়মানঃ গরিবের কথা বাসি হলেও মিষ্টি হয়। 

আমিঃ কি করবো বল, আব্বু আম্মুর দিকে তাকিয়ে ওকে কিছু বলতেও পারছি না।

আয়মানঃ ও, এখন কোথায়?

আমিঃ ওর বাবার বাসায়। আমার এক্সিডেন্ট এর আগে গেছে এখনো আসেনি।

আয়মানঃ একবাও, আসেনি?

আমিঃ না,কল করে জিঞ্জেসও করেনি আমি বেঁচে আছি না কি মরে গেছি।

আয়মানঃ তাহলে সিউর থাক ওর অন্য কোথাও রিলেশন আছে।

আমিঃ দোস্ত ওকে ফলো করতে পারবি?

আয়মানঃ ওকে করলাম,সমস্যা কোথায়। কিন্তু এটা সিউর অবন্তী তোর কাছে থাকবে না। আগে হোক আর পরে হোক ওকে ডিভোর্স দিতে হবেই। তুই না দিলেও সে
 তোকে দিবে।

আমিঃ আচ্ছা তুই সুধু ফলো কর।

আয়মানঃ ওকে,

আমিঃ আরো কিছু কথা বলে বাসায় চলে আসলাম। এসে ফ্রেস হলাম। আম্মু রুমে আসলো.... আম্মু কিছু বলবে?

মাঃ হুম

আমিঃ বলো। আব্বু কোথায়??

মাঃ  বাইরে গেছে।

আমিঃ কি বলবা... বলো।

মাঃ মেয়েটা অনেক দিন বাসায় নেই। বাসাটা কেমন খালি খালি লাকছে, যা না বাপ ওকে নি আয়।

আমিঃ কাকে?

মাঃ অবন্তীকে। ওকে অনেক মিস করছি, তোর আব্বু বলেছিলো বিকালবেলা যাবে কিন্তু আমি যেতে দেই নি।
 আমি বলেছি তুই গিয়ে নিয়ে আসবি।

আমিঃ ও নিজে থেকে আসবে, আমি নিয়ে আসতে পারবো না।

মাঃ এটা কেমন কথা, একা একটা মেয়ে কি করে আসবে।

আমিঃ আরে আজব এতো রাতে ওকেকেমনে নিয়ে আসবো। সকাল হোক আমি গাড়ি পাঠিয়ে দিবো, 
ও চলে আসবে।

মাঃ না তুই এখন যা,  ওকে নিয়ে আয়।

আমিঃ মানে কি এখন নিয়ে আসবো ? এই রাতের বেলা,,,,

মাঃ তোরে কি বলছি আজকে রাতেরই নিয়ে আসতে হবে, আমি বলছি তুই এখনযাবি রাতটা ওখানে থাকবি কালকে সকালে ওকে নিয়ে আসবি।

আমিঃ পারবো, না।

মাঃ ঠিক আছে আমিই যাচ্ছি।

আমিঃ আম্মু শোনো। ঠিক তার পরেই.... 
.
.
#চলবে_কি??
.
.
Next Part Coming SooN........
গল্প পড়ে কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন, আপনাদের মতামত আমাদের অনুপ্রেরণা 😍
..
.

.
#বিঃদ্রঃ ভুলক্রুটি ক্ষমা ও সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আর ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট করে সাথে থাকবেন। আপনাদের লাইক কমেন্ট দেখলে মনে হয় গল্পটা আপনাদের ভালো লেগেছে এবং আপনারা গল্পটা পড়েছেন,আর তাতে করে আমার ও পরবর্তী পর্বটা দেওয়ার আগ্রহ বেড়ে যায়

No comments:

Post a Comment