Friday, June 26, 2020

গল্প : অবহেলা।পর্ব:০১


নীলাঃএই তুই আমার মোবাইল ধরছোস ক্যান। তোরে মোবাইল ধরতে নিষেধ করছি না।তবুও তুই আমার সামনে আমার মোবাইল ধরছোস,হুম।

আকাশঃদেখো আমি তোমার স্বামী। আমি তোমার মোবাইল ধরতে পারি। আর তোমার মোবাইলে কি আছে, আমি তা দেখতে পারি। আমার দেখার অধিকার আছে।

নীলাঃদেখ তোরে আমি স্বামী হিসেবে কখনো মেনে নিতে পারবো না।আমার বাবার মুখের কথা রাখতে গিয়ে আমি তোকে বিয়ে করেছি। আর শোন তুই তো একটা ছোটলোক। তোর সাথে আমার স্টাটাস কখনো মানাবে না। সুতরাং তকে আমি স্বামী হিসেবে কখনো মেনে নিতে পারবো না, বুঝলি।আর শোন তুই কখনো আমার সামনে আসবি না, বুঝলি। তুই আজ থেকে এই বাড়িতে থাকতে পারবি না।

আকাশঃমজা করছো কেনো, আর আমি তা ছাড়া কোথায় যাবো,

নীলঃ ওই তোর কি মনে হয় আমি তোর সাথে মজা করছি হুম।আর শোন তুই কোথায় যাবি, আমার তা জানার দরকার নাই। আর কয়েক দিন এর মধ্যে ডিভোর্স পেপার এসে যাবে তুই তাতে সাইন করে দিবেন।

আকাশঃ নীলা তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি যে, কি সব আবোল তাবোল কথা বলতেছো আর আমি এখানে না থাকলে কোথায় যাবো, আমার তো আর যাবার কোন জায়গা নাই, এগুলো জেনেও তুমি এই কথা বলতাছো,

নীলাঃএতো কথা শুনতে চাইনা, তুই আর এখানে, আমাদের বাড়িতে আর না আসলে খুশি হবো,আমি আর তোর,, আমাদের দুজনের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত,
সো তোর সাথে আমার মিলবে না,

আকাশঃএখন তুমি এই কথা বলতাছো,

নীলাঃআমি এখন একজন ডাক্তার, আমার এখন এমন স্ট্যাটাস আছে,,আর আমি এখন অনেক বড় লোক, আর তুই তো আগে যেমন ছিলি তেমনি আছস, আর আমাদের এখানে না আসলে খুশি হবো

আকাশঃমনটা খারাপ হয়ে গেলো নীলার কথা শুনে, কিন্ত,
ওহহহ সরি , আমি আর তোমাদের এখানে আসবোনা,

নীলাঃহুম এর পর থেকে আমি আর তোকে যেনো না দেখি,এখানে।

আকাশঃহুম,

চারিদিকে একবার তাকিয়ে চলে আসতে লাগলো,

আকাশের মনটা খারাপ হয়ে গেলো নীলার কথা শুনে,

নীলার ডাক্তার হওয়া। আমার জন্য হলো আর আজ সেই নীলা আমাকে তাদের বাড়ি যেতে মানা করতাছে,

নীলা আর আমার বিয়ে হয় বছর ৩ আগে,
নীলার পরিবার টা ধনি ছিলো না,মধ্যবিত্ত ছিলো,,

নীলার বিয়ে ঠিক হয়, এক ছেলের সাথে,
কিন্তু সেদিন ছেলেটা বিয়ে করতে আসে না,
আর নীলার ভাই, আমার বন্ধু ছিলো,
সেই কারনে নীলাকে আমাকে বিয়ে করতে বলে,

আমি একটা ভালো জব করতাম তার ফলেই পরে আমাকে বিয়ে করতে বলে, নীল এর বোন কে,(নীলার ভাই,আমার বন্ধু)

নীলাকে বিয়ে করি ঠিকি, কিন্তু
সেদিন নীলা আমার কাছে একটা জিনিস চাইছিলো,সেটা হলো,

নীলা ডাক্তার লাইন এ পড়তাছে, যে পর্যন্ত ডাক্তার না হতে পারবে সেই পর্যন্ত আমি তার পাশে সুইতে পারবো না,,
নীলা বলেছিলোঃডাক্তার হওয়া আমার সেই ছোট থেকে, কল্পনা করে আসছি,

আমি সেদিন রাজি হয়ে গেছিলাম,

সেই থেকে আমি যা বেতন পেতাম সেই টাকা দিয়ে, নীলার কল্পনাটা বাস্তবে পুরন করতে থাকি,

আমি যখন নীলা কে বিয়ে করি তখন ১ বছর হলো, নীলা, MBBS ভর্তি হয়েছে।

আর তিন টা বছর আমি নীলার স্বপ্ন টাকে বাস্তবে আনার জন্য, অনেক কষ্ট করেছি,

নীলার পড়া শেষে অনেক সার্কুলার ছারলো,
নীলা প্রায় সব টাতে apply করতো,

কিন্তু apply করার পর , যে নীলার চাকরি হয় না,

এক বার বাইভা তে বাত পড়ছে, , এভাবে কয়েক টা apply এ পরিক্ষা দিতো,, প্রত্যেক টা পরীক্ষায় টিকতো, কিন্তু টাকা ছাড়া চাকরি হয় না,, এখন কার সময়ে,,

টাকা ছাড়া চাকরি হয় না, বলে
নীলা খুব ভেঙ্গে পড়েছে,
কারন তার বাবা মায়ের ও এতো টাকা নাই যে, নীলাকে দিবে চাকরি নিয়ে দিবে,,

সামনে একটা সার্কুলার নীলার আছে,এটাই এই বছরের শেষ সার্কুলার, যদি এটাতে না চাকরি হয় তাহলে আবার ৫ বছর পরে,

নীলা অনেক কান্না করলো,
যে এতোগুলা গুরে যেহুেতু হইনাই তাহলে এটাও হবে না,

আমি তার পর আমার অফিসে গিয়ে লোন চাই, তারা আমাকে ৫ লাখ টাকা দেয়,

নীলার চাকরির জন্য ১২ লাখ টাকা দরকার,
আর আমার কাছে ছিলো ২ লাখ এর মতো,

হলো ৭ লাখ,
একটা দালাল দরছি সে চাকরি নিয়ে দিবেই,,এ্যাপায়ারম্যান কার্ড দিবে হাতে তার পর তাকে টাকা দিতে হবে,,
আমি রাজি হই,,

পরে টাকার জন্য অনেক খুজি,

আমার কাছে ৭ লাখ টাকা আছ। আরো ৫ লাখ টাকা দরকার,

নীলা ও মন মরা হয়ে বসে থাকে, সে ভেবে নিয়েছে যে তার চাকরি আর হবে না,

আর মাত্র ২ দিন আছে, কিন্তু আমি এখনো আরো ৫ লাখ টাকা জোগার করতে পারি নাই,

আজকে নীলার সেই লাষ্ট পরিক্ষা,

নীলা পরিক্ষা দিতে যাবে,তখন

নীলাঃগিয়েই আর কি হবে চাকরি তো হবে না,

আমিঃসেটা একমাত্র আল্লাহ তায়ালা জানে,,তুমি শুধু ভালো মতো পরিক্ষা দিবা,
,
নীলাঃআচ্ছা, আর তুমি চলো আমার সাথে,
আমিঃনা তুমি যাও আমার কাজ আছে
নীলাঃমন খারাপ করে পরিক্ষা দিতে গেলো,,

নীলা যাওয়ার পর,
ফোন করলাম, দালাল কে,

আমিঃচাকরি হতে যা লাগে করবেন,,টাকার ব্যবস্থা হয়েছে,মনে রাখবেন, নীলার হাতে কার্ড টা পাওয়া মাত্র টাকা টা দিবো আপনাকে,

দালালঃআচ্ছা,

খুশির খবর এটাই যে, সেদিন নীলার চাকরি টা হয়েছে।

দালাল আর আমি একটা জায়গায় দাড়িয়ে আছি,

দালালঃআপনার কথা মতো কাজ করছি,
আমিঃআপনি যানেন এই টাকাটা কতো কষ্টের পর জোগার করছি,

দালালঃআমি জানি যারা টাকা জোগার করে অনেক কষ্ট করেই জোগার করে,
আমিঃকিন্তু আমি যে অনেক কষ্ট করে জোগার করছি,

শার্ট টা একটু তুলে, এই যে দেখুন, আমার শরিরের একটা কিডনি বিক্রি করে টাকা জোগার করছি,

আমিঃঅবাক হয়ে যায়,, কেননা মাত্র একদিন হয়েছে, আমাকে অপারেশন করে কিডনি টা নিয়েছে, শিলাই টা রয়ে গেছে, হালকা রক্ত পড়তাছে,

দালালঃএটা কি করছেন, এমন টা কেউ করে,

আমিঃআমার বউ কে চাকরি নিয়ে দিছি,,কিছুদিন পর আমার বউ টা টাকা কামাই করে আমার এই কিডনি টা প্রতিস্থাপন করাবে,

দালালঃএবার টাকা টা দিন,

আমিঃটাকা টা হাতে দিয়ে, চলে আসলাম,

পরে বাসায় আসি, এসে দেখি যে নীলা বাসায় নাই,
ফোন দিলাম নীল এর কাছে,

নীলঃআপু বাসায় আছে,

আমিঃওকে বলে ফোন টা কেটে দিলাম,
আমার এখন এতোটা শক্তি নাই যে নীলার বাড়িতে যেতে পারবো,,
তাই বাসায় গিয়ে সুয়ে পড়লাম,

এভাবে কয়েক দিন চলে যায়,,
নীলা এখনো এখানে আসে নি, নীলকে ফোন দিলে, বলে আপু ব্যাস্ত।

আমি কিছু বলি না, চাকরি হয়েছে তাই ব্যাস্ত,,

নীলা চাকরি তে জয়েন করে,,

কয়েক দিন এর মধ্যে,

তখন আমি নীলার কাছে যাই,,
তখন নীলা কি বললো আপনারা দেখলেন তো ওপরে, কথাগুলো,,

আমি তখন মন খারাপ করে বাসায় এসে পড়ি,
নীলা এমন টা করতে পারলো,,নাকি মন খারাপ করে বলছে কথাটা আমাকে,

তার পরের দিন, অফিসে না গিয়ে নীলার বাড়িতে যাইলাম,

------------চলবে--------

 Part : 2 https://babu3574.blogspot.com/2020/06/blog-post_44.html

No comments:

Post a Comment