Saturday, September 25, 2021

চুপি চুপি_ভালোবাসি #পর্বঃ০৪

চুপি চুপি_ভালোবাসি  #পর্বঃ০৪

চিল্লানোর আওয়াজে মধু থমকে দাড়ালো।অন্ধকারে তো কিছু দেখাও যাচ্ছে না।হঠাৎ কারেন্ট চলে আসায় মধু সিড়িতে তাকিয়ে দেখলো নিশির হাতে পাড়া দিয়ে দাড়িয়ে আছে মধু।তৎক্ষনাৎ মধু পা টা সরিয়ে নিলো।তারপর নিশির পাশে বসে বলল"সরি আপু।আসলে অন্ধকার ছিলো তাই খেয়াল করি নাই।তুমি এখানে বসে আছো কেনো?"


"ইয়া.....কিছু না এমনিই।কারেন্ট চলে গিয়েছিলো তো তাই আর কি।"


"ও আচ্ছা চলো তাহলে বাসায় যাও।আমিও যাই।"


"আচ্ছা তুমি যাও।আমি এখনই চলে আসবো।"


মধু আবার ফেরত গেলো ওর ফ্ল্যাটের দিকে হঠাৎ মনে হলো তিনতলায় কেউ কান্না করছে।মধু দেখার জন্য সিড়িতে এসে তিনতলায় ঝুঁকতেই দেখলো নিশি ওর ক্রাশবয়ের কলার চেপে ধরে বলছে"ইয়াদ,কেনো এমন করছো বলতো?একটা ভুলের জন্য এতোবড়ো শাস্তি কেনো দিচ্ছো?আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না?"


ইয়াদ নিশির হাতটা নিজের কলার থেকে ধাক্কামেরে সরিয়ে দিয়ে বলল"তুমি যেটা করেছিলে সেটা ভূল না অপরাধ।আর কেউ ক্ষমা করলেও আমি পারবো না।আমি এতো উদার না।আর প্লিজ দয়া করে আমাকে ডিস্টার্ব করবে না।অসহ্য লাগে আমার।"


নিশি কাঁদতে কাঁদতে বলল"তাহলে এইবাড়িতে কেনো এসেছো?"


"আমি জানতামও না তুমি এখানে থাকো।জানলে আসতামই না।"


নিশি চোখের পানি মুছে বলল"তাহলে সন্ধ্যার সময় যে খাবার পাঠাতাম ওগুলো নিতে কেনো?চিরকুটে কেনো লিখতে আই লাভ ইউ?কেনো?"


ইয়াদ মনে হয় আকাশ থেকে পড়লো নিশির কথা শুনে।কি যাতা বলছে!ইয়াদ তো কখনো কোনো খাবার পায় নি জানালা দিয়ে।ইয়াদ ভ্রু কুঁচকে বলল"ও হ্যালো,কি বলছো এগুলো।আমি কখনো কোনো কিছু পাই নাই।আর তুমি যা করছো তারপর থেকে তোমার মুখও তো দেখতে মন চায় না চিরকুট লেখাতো দূরের কথা।"


"মিথ্যা বলবা না ইয়াদ।চিরকুটগুলো এখনো আছে আমার কাছে।"


এতক্ষণ ধরে মধু সবকিছু দেখে স্থির থাকলেও নিশির এ কথা শোনার পর আর স্থির থাকতে পারলো না।তোলপাড় চলছে ভেতরে।নিশি যদি চিরকুটগুলো দেখিয়ে দেয় আর ইয়াদ যদি জানতে পারে তাহলে কি ভাববে!নির্ঘাত পেটুক ভাববে।মধু এগুলো ভাবতে ভাবতেই দেখলো নিশা চিরকুটগুলো ইয়াদের হাতে দিয়ে বলল"এগুলো তুমি লেখো নি?"


ইয়াদ চিরকুটগুলো হাতে নিয়ে ভ্রু কুঁচকে বলল"নাটক করো আমার সাথে?এগুলো তো আমার লেখাই না।কার না কার চিরকুট এনে আমার নামে চালাচ্ছো।লজ্জা হওয়া উচিত"


"লজ্জা তো তোমার হওয়া উচিত।খেয়ে আবার চাইতে।ছ্যাঁচড়া কোথাকার।"


এটা বলে নিশি ওপরের দিকে আসতে নিলে মধু একদৌড়ে নিজেদের ঘরে ঢুকে গেলো।ঘরে আসার পর আইরিন রহমান বললেন"কি রে মধু।এতক্ষণ কই ছিলি?কারেন্ট তো তুই যাওয়ার পাঁচ সেকেন্ড পরেই চলে আসছে।"


"আরে আম্মু নিচে ইরিনের সাথে দেখা হয়ে গেছিলো।তো ওর সাথে কথা বলতেই দেরি হয়ে গেছে।"


"ও,,আচ্ছা।কিছু না পারলে ওকে বলিস।মেয়েটা অনেক মেধাবী।তোর মতো ফেল্টু না।"


মধু মনে মনে বলল'আপনা টাইম আয়ে গা।"এটা মুখটা বাঁকা করে নিজের ঘরে চলে গেলো।নিজের ঘরে গিয়ে বসে নিচের কাহিনী মেলাতে লাগলো'তারমানে ইয়াদ এই ছেলের নাম আর এই ছেলের সাথে নিশি আপুর রিলেশন ছিলো।কোনো কারণে এটা ভেঙে গেছে আর নিশি আপু চাইছে এটা ঠিক করতে কিন্তু ছেলেটা চাইছে না।ইশ!ব্রেকাপটা আরো কয়েকদিন পর করলে ভালো হতো!এখন তো আর জানালা দিয়ে কোনো খাবারও দিবে না।এটা ভেবেই মধু মন খারাপ করে ফেললো।তবুও একটু শান্তি পাওয়া গেলো ওরা বুঝতে পারে নি এটা যে মধুর কাজ।ইয়াদ ভাবছে নিশি মিথ্যা নাটক করছে।আর নিশি ভাবছে ইয়াদ মিথ্যা বলছে।খেয়ে আবার ছ্যাচড়ামি করছে।

.

.

আর মধু আপসেট মুডে পড়তে বসলো।

------------------

আইরিন রহমান এসে মধুর মুখে পানির ছিটা দিয়ে বললেন"তাড়াতাড়ি ওঠ মধু।সাতটা বেজে গেছে।এতো ঘুমালে শ্বশুর বাড়ি গিয়ে কি করবি?সংসার করে খেতে পারবি না।"


মধু চোখ মুখ কচলে উঠে বসলো।তারপর ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলল"আমার প্রয়োজন নেই সংসার করার এমনিতেই অনেক ভালে আছি।আর তোমাকে না আমি বারবার বলেছি সংসার নামক এসব ফালতু জিনিসের নাম আমার সামনে বলবে না।"


"তাহলে তোকে কি সারাজীবনই বসিয়ে খাওয়াবো নাকি?"


"সারাজীবন লাগবে না।আরো কয়েকটা মাস কষ্ট করো।অনার্সে ভর্তি হয়েই জবে ঢুকবো।"


"হুম।অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে উঠেই তুমি চাকরী পেয়ে যাবে।চাকরী মনে হয় হাতের মোয়া।"


"চাকরী না পেলে মাটি কাটবো,ইট ভাঙবো,চৌরাস্তার মোড়ে ভিক্ষা করবো তবুও তুমি চুপ করো।তোমার থেকে আর খাবো না।এবার যাও।"


আইরিন রহমান মুখ বাকিয়ে চলে গেলেন।আর মধু বিরক্তমুখে ওয়াশরুমে চলে গেলো।সকাল সকাল মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো।মধু ফ্রেশ হয়ে কলেজের ইউনিফর্ম পরে নাস্তা না খেয়েই বেরিয়ে পড়লো।পেছন থেকে আইরিন রহমান ডাকলেও শুনলাম না।রাগটা যেনো মাথায় চেপে বসেছে।রাস্তা দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে হাটছিলো মধু।আসলে নিচের দিকে শুধু তাকিয়ে ছিলো বললে ভূল হবে কাঁদছিলো।হঠাৎ কেউ একজন ওর সামনে এসে দাড়ালো।মধু চোখ মুছে মুখ তুলে তাকালো।তার সামনে ইয়াদ দাড়িয়ে আছি।ইয়াদ মুধর কান্নারত ইষৎ লাল হওয়া আধবেজা মুখের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো কারণ এই মুখটা আরো একবার দেখেছে ইয়াদ।যেদিন মেয়েটা বিপদে পড়েছিলো সেদিনও এভাবে কাঁদতে কাঁদতে এসে সাহায্য চেয়েছিলো।কিন্তু আজ কেনো কাঁদছে।ইয়াদ মধুকে কিছু জিগ্যেস করার আগে আশেপাশে তাকালো কেউ কি ওকে বিরক্ত করছে কি না!নাহ!তেমন কেউ তো নেই।তাহলে কাদছে কেনো?ইয়াদ বলল"কাঁদছো কেনো?"


"এমনিতেই মন চাইছে।"


ইয়াদ ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো।কি বলে মেয়েটা।কান্না কি কেউ এমনিতে করতে পারে নাকি!কান্না করার জন্য একটা কারণ প্রয়োজন।ইয়াদ বলল"এমনিতেই কান্না করে না।তুমি যদি না বলো আমি সাহায্য করবো কি করে?কেউ কি রাস্তায় কিছু বলছে?"


"না,,,একটা ব্যাক্তিগত বিষয়ে মন খারাপ।"


"ওও,," তারপর ইয়াদ আর কিছু বলতে পারলো না মধু পাশ কাটিয়ে চলে গেলো।মধুর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ইয়াদ মনে মনে বলল'এইটুকু মেয়ের আবার ব্যাক্তিগত ব্যাপার!নিশ্চিত বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়াঝাঁটি হয়েছে।তাই শেয়ার করতে চাইছে না।"ইয়াদ মনে মনে এগুলো ভেবে হাঁটতে লাগলো

-------------------

কলেজে পৌঁছে মধু আরিয়ার পাশে এসে বসলো।আরিয়া হোমওয়ার্ক করছিলো।মধুকে দেখে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বলল"কি রে মুখ এমন দেখাচ্ছে কেনো?কান্না করছিস নাকি?"


"না তেমন কিছু না।"


"লুকিয়ে লাভ নাই।আমি সবই জানি।আজকেও কি আন্টির সাথে রাগ করছিস?"


মধু রাগে কাঁদতে কাঁদতে বলল"আমার মা এমন কেনো রে?খাওয়ায় খোঁটাও দেয়।আমি খোঁটা সহ্য করতে পারি না।আমি হাড়েহাড়ে বুঝতে পারছি বাবা না থাকলে কি হয়।"


আরিয়া মধুর চোখ থেকে পানি মুছে দিয়ে বলল"কান্না করিস না।শান্ত হ,দেখ আন্টি রাগের মাথায় বলেছে।উনি তোকে কষ্ট দেবার জন্য বলে নি।আর তুই একটা জিনিস চিন্তা কর।তার জায়গায় তুই থাকলে কি করতি?সেও তো মানুষ!তারও কষ্ট আছে।তবুও সে কিন্তু তোদের দু'বোন কে মানুষ করছে।তাই প্লিজ আন্টিকে দোষ দেওয়া বন্ধ করে ধৈর্য ধর আল্লাহ তো আছেনই।"


মধু চোখ মুছে বলল"হুম।তুই বস আমি আসছি মুখ ধুয়ে।"


"আয়।"


মধু মুখ ধুয়ে এসে আরিয়ার পাশে বসলো।আর তখনই স্যার এসে ক্লাসে ঢুকলো।আর ক্লাস শুরু হলো।

---------------

কলেজ ছুটি হয়েছে দুপুর দুপুর ১.০০ টায়।আর এখন চারটা বাজে।এতক্ষণ একটা কোচিং করে আর ভালো লাগছে না।দুজনই ঠিক করলো বাসায় চলে যাবে।তারপর দুজনই বাসায় চলে আসলো পরের কোচিংটা না করেই।বাসায় এসে মধু জামা কাপড় ছেড়ে শাওয়ার নিয়ে ছাঁদে চলে গেলো।আইরিন রহমান ওকে ছাদে যেতে দেখে আটকালেন না।এমনকি কোনো কথাই বললেন না।মধু ছাঁদে এসে দাড়িয়ে ছিলো রেলিঙের দিকে মুখ করে।পেছন থেকে কেউ একজন বলল"আজকে এতো তাড়াতাড়

2 comments:

  1. 1xbet korean: Online betting and iGaming business
    Bet 1xbet korean, legal betting online and iGaming business is a fast growing game on the 1xbet kz online betting market.

    ReplyDelete